তথ্যবিবরণী নম্বর : ২৩০২
একটি বাড়িকেও আইনের আওতার বাইরে রাখা হবে না
-- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী
ঢাকা, ৭ আষাঢ় (২১ জুন) :
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘কোনো রকম দুর্নীতি ও অনিয়মের ভেতর দিয়ে ঢাকা মহানগরী কংক্রিটের জঞ্জাল শহরে পরিণত না হোক। মানুষের জীবন বিপন্ন না হোক। নিমতলী, চূড়িহাট্টা, বনানীর অগ্নিদুর্ঘটনার মতো ঘটনা আর না ঘটুক। অনুমোদিত নকশা, ফাঁকা জায়গা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, গ্যারেজ ছাড়া ভবন নির্মাণ করতে দেয়া হবে না। পূর্বাচল, উত্তরার মতো জায়গায় নকশার বাইরে ন্যূনতম কিছু হতে দেয়া হবে না। সবার সহায়তায় আমরা সারা দেশে পরিবেশবান্ধব আবাসন করতে চাই’।
আজ ঢাকার সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম বনানীর এফ আর টাওয়ারের তদন্ত আলোর মুখ দেখবে। আমি আনন্দিত, তদন্ত রিপোর্ট সাংবাদিকদের সামনে আমি নিয়ে এসেছি এবং ৬২ জন কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে রিপোর্ট দেয়া সম্ভব হয়েছে। দুর্নীতির ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্সের প্রশ্নে ৬২ জনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজউককে আমরা লিখিত নির্দেশ দিয়েছি’।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকার বহুতল ভবনে রাজউকের ২৪টি পরিদর্শন দল ১৮১৮টি বাড়িতে অনিয়ম পেয়েছে। এ বাড়ির মালিকেরা অনেকেই ক্ষমতায়, রাজনীতিতে ও অর্থে প্রভাবশালী। আমি রিপোর্ট সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজউককে নির্দেশ দিয়েছি। একটি বাড়িকেও আমরা আইনের আওতার বাইরে রাখতে চাই না। পুরনো ঢাকার জন্য আমরা রিডেভেলপমেন্ট প্রস্তাব দিয়েছি। নতুন ঢাকায় একেবারে অনিয়মের বিল্ডিংগুলো ভেঙে ফেলতে হবে, যেটাকে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে টিকিয়ে রাখা যায়, সে বিল্ডিংকে সেভাবে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। একেবারে অনিয়মের বিল্ডিং ভাঙা না হলে সিলগালা করে দেয়া হবে। রাজউকের সংশ্লিষ্ট অফিসার যথাযথ কাজ না করলে তাদের ধরার দায়িত্ব যেমন আমার, তেমনি সকল নাগরিকেরও দায়িত্ব রয়েছে’।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে যে অনিয়ম দেখেন তার নিউজ হওয়া উচিত। নিউজ হলে আমি অনেক সহজে কাজ করতে পারি। পত্রিকার নিউজের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত করবো। ইতোমধ্যে মিডিয়ার নিউজের ওপর ভর করে ১২টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি’।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে সিন্ডিকেট ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ করতে না পারলেও আমি কমিয়ে আনতে পেরেছি। অনেক চূড়ান্ত টেন্ডারকে আমি বাতিল করে নতুন টেন্ডার করিয়েছি। আমার জায়গা আমি যতটা পারি পরিষ্কার রাখতে চাই’। আমি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছি উপরে আল্লাহ, নিচে শেখ হাসিনা, মাঝখানে আমার কোনো তদবির নাই’।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না, এটা সরকারের অঙ্গীকার। বাসস্থান মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। সে জন্য বস্তিবাসী থেকে শুরু করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত, চাকরিজীবী, বিচারকসহ সকলের জন্য আবাসন নিশ্চিত করা এবং শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমরা কাজ করে চলেছি। আমরা চাই বাংলাদেশে একটা আধুনিক, সমৃদ্ধ আবাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পাক। পূর্বাচল, ঝিলমিল, উত্তরা ৩য় ফেজে আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশসম্মত, ঝুঁকিমুক্ত মহানগর, নগর, গ্রাম ও আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা আমাদের মন্ত্রণালয়ের অন্যতম দায়িত্ব। এ জন্য একটি গতিশীল পরিচ্ছন্ন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে আমরা দায়িত্ব সম্পাদনের চেষ্টা করছি’।
বিজিএমইএ ভবন ভাঙা এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অনিয়ম সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘বিজিএমইএ ভবন ভাঙার জন্য টেন্ডার আহ্বান করে আমরা সর্বোচ্চ দরদাতাকে নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের সাথে চুক্তি করা হবে এবং চুক্তির শর্তে কোনোভাবেই জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় ভবন ভাঙতে দেয়া হবে না। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অনিয়মের ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেবো’।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি ভবনে মানসম্মত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকবে’। সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের জায়গায় ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না’।
ড্যাপ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি ড্যাপের কমিটি পুনর্গঠন হয়েছে। বাজেট অধিবেশনের পরে ড্যাপের সভা করে কোনো অসঙ্গতি থাকলে তা শুদ্ধ করা হবে’।
উল্লেখ্য, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খানের সঞ্চালনায় মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন।
#
ইফতেখার/মাহমুদ/মোশারফ/সেলিম/২০১৯/১৮০০ ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর : ২৩০১
বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় রাশিয়া সহযোগিতা করবে
মস্কো (রাশিয়া), ২১ জুন :
ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ে বাংলাদেশকে রাশিয়া সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীকে রুশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন উপমন্ত্রী এবং রাশিয়ার ‘ফেডারেল সার্ভিস ফর স্টেট রেজিস্ট্রেশন, ক্যাডাস্ট্রে এন্ড কার্টোগ্রাফি’ (রোজরিস্তার)’র প্রধান ভিক্টোরিয়া আব্রামচেঙ্কো দু’দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ আশ্বাস প্রদান করেন।
গতকাল ২০ জুন রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে রোজরিস্তার সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের ভূমিমন্ত্রী রুশ মন্ত্রীকে জানান, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা এখন সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণরূপে ডিজিটালাইজড হয়ে যাবে। ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান
মোঃ আব্দুল হান্নান এ সময় মন্ত্রীর সাথে ছিলেন।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জিও-পোর্টাল, ব্লকচেইন রেজিস্ট্রেশন প্রযুক্তি, কৃষিজমি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, ভূমি জরিপ, ভূমি সার্ভিস, ল্যান্ড জোনিং, বিজ্ঞানসম্মত ভূমি ব্যবহার, বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তি বিনিময় প্রভৃতি বিষয়ের ওপর আলোচনা হয়।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ভূমি আপিল বোর্ডের সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ভূমিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব মোঃ হাফিজুর রহমান চৌধুরী, রাশিয়ার রোজরিস্তার উপপ্রধান নাদেজদা সামোয়লোভা ও ম্যাক্সিম স্মার্নঅফসহ দুই দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
#
নাহিয়ান/মাহমুদ/রাহাত/মোশারফ/আব্বাস/২০১৯/১৭২৫ ঘণ্টা