তথ্যবিবরণী                                                                                             নম্বর : ১৩৮

জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

ঢাকা, ২৯ পৌষ (১২ জানুয়ারি) :

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রদান করেন। ভাষণটি নিম্নরূপ ঃ

“বিসমিলস্নাহির রাহমানির রাহিম
প্রিয় দেশবাসী,
আসসালামু আলাইকুম।

সবাইকে নতুন বছর ২০১৭-এর শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আজ ১২ই জানুয়ারি। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে আজকের দিনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি তৃতীয়বারের মত শপথ গ্রহণ করি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের তৃতীয় বছর পূর্তিতে দেশবাসীকে জানাই আনত্মরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি ২৪ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, জেল-জুলুম এবং নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করে আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশ।   
স্মরণ করছি ৩রা নভেম্বর জেলখানায় নিহত জাতীয় চারনেতা- সৈয়দ নজরম্নল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরম্নজ্জামানকে।  
শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদকে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, স্বজন হারানো পরিবার ও একাত্তরে নির্যাতিত ২-লাখ মা-বোনের প্রতি জানাচ্ছি আনত্মরিক সমবেদনা। মুক্তিযোদ্ধাদের জানাই সালাম।
গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের ঘৃণ্য হত্যাকা-ের শিকার আমার মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, আমার তিন ভাই - ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ও দশ বছরের শেখ রাসেল- কামাল ও জামালের নবপরিণীতা স্ত্রী সুলতানা ও রোজী, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র সহোদর শেখ নাসের, বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জামিলসহ সেই রাতের সকল শহীদকে।
স্মরণ করছি, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ শহীদ ২২ নেতা-কর্মীকে।
স্মরণ করছি বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় নির্মম হত্যাকা-ের শিকার সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা আহসানউলস্নাহ মাস্টার, মঞ্জুরম্নল ইমাম, মমতাজউদ্দিনসহ ২১ হাজার নেতাকর্মীকে।
স্মরণ করছি সম্প্রতি নিহত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মনজুরম্নল ইসলাম লিটন-কে। দশম সংসদের যে সকল সংসদ সদস্য ইনেত্মকাল করেছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
প্রিয় দেশবাসী,
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার টানা ৮ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে ৯ম বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে।
আপনারা এই দীর্ঘ সময় ধরে আমাকে এবং আমার সরকারকে আপনাদের সেবায় নিয়োজত থাকার সুযোগ দিয়েছেন। এ জন্য আমি আপনাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আপনাদের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পেরেছি- সে বিচারের ভার আপনাদের উপরই রইল। তবে আমি এটুকু দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, দেশের এবং দেশের মানুষের উন্নয়ন এবং কল্যাণের জন্য আমরা আমাদের চেষ্টার ত্রম্নটি করিনি।
আমাদের মনে রাখতে হবে, বিপুল জনসংখ্যার এদেশে সম্পদের পরিমাণ সীমিত। দীর্ঘকাল দেশে কোন আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়নি। বহু সমস্যা পুঞ্জিভূত হয়ে পাহাড়-সমান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মোকাবিলা করতে হয়েছে অভ্যনত্মরীণ বিরম্নদ্ধ পরিবেশ। বৈশ্বিক বৈরি অর্থনৈতিক অবস'াও উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বার বার।
চলমান পাতা-১/৭

কিন' সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সর্বজনীন মডেল। দ্রম্নত সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বব্যাংক মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী উপস'াপন করছে।  
আট বছর আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ আত্মপ্রত্যয়ী বাংলাদেশ।
প্রিয় দেশবাসী,
অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ ৫টি দেশের একটি আজ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকারও বেশি। যা জিডিপির ভিত্তিতে বিশ্বে ৪৪তম এবং ক্রয় ড়্গমতার ভিত্তিতে ৩২তম।
ধারাবাহিকভাবে ৬.৫ শতাংশ হারে প্রবৃৃদ্ধি ধরে রেখে পুরো বিশ্বকে আমরা তাক লাগিয়ে দিয়েছি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.১১%। আগামী বছরের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.৪%।
অর্থনীতি ও সামাজিক সূচকের অধিকাংশ ড়্গেত্রে আমরা দড়্গিণ এশিয়ার এবং নিম্ন-আয়ের দেশগুলিকে ছাড়িয়ে গেছি।
প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্স-এর রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৯তম ও ২০৫০ সাল নাগাদ ২৩তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হবে।
জনগণের মাথাপিছু আয় ২০০৫-০৬ সালের ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে আজ ১ হাজার ৪৬৬ ডলার হয়েছে।
দারিদ্র্যের হার ২০০৫-০৬ সালে ছিল ৪১.৫ শতাংশ। এখন তা হ্রাস পেয়ে হয়েছে ২২.৪ শতাংশ। অতি দারিদ্র্যের হার ২৪.২৩ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। আমাদের লড়্গ্য ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ১৫-১৬ শতাংশে এবং অতি দারিদ্র্যে হার ৭-৮ শতাংশে নামিয়ে আনা ।  
একদিকে মানুষের ক্রয় ড়্গমতা যেমন বেড়েছে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে থাকায় মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। ২০০৯ সালে মূল্যস্ফীতি ছিল ডাবল ডিজিটে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৫.০৩ শতাংশ।
২০০৫-০৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ১০.৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪.২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সাল নাগাদ ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লড়্গ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এ লড়্গ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমরা জাতীয় রপ্তানি নীতি ঘোষণা করেছি এবং বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছি।
বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ শক্তভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বর্তমানে ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও উপর ।
বিগত আট বছরে দেশ-বিদেশে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস'ান হয়েছে। গত বছর রেকর্ড ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। ৫ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে।
সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাসত্মবায়ন ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাসত্মবায়নের কাজ শুরম্ন হয়েছে।
২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই, তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় ১৫ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।
২০২১ সালের মধ্যে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চাই। সেই লড়্গ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। কয়েকটি বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরম্ন করেছি।
আমি দেশবাসীকে আশ্বসত্ম করতে চাই, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আমরা পরিবেশ সুরড়্গায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস'া গ্রহণ করেছি।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপরও বিশেষ গুরম্নত্ব দেওয়া হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা এবং প্রত্যনত্ম চরাঞ্চলসহ সারাদেশে প্রায় ৪৫ লাখ সোলার হোমসিস্টেম বসানো হয়েছে। মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ উৎপাদন করা হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে।   
  আমরা পরমাণু ক্লাবে যুক্ত হতে যাচ্ছি। পাবনার রূপপুরে ২০০০ মেগাওয়াট ড়্গমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।
আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিত ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা। ৮ বছরে দেশে কৃষিখাতের ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন প্রায় ৪ কোটি  মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ এখন খাদ্য-উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ এবং সবজি উৎপাদনে তৃতীয় স'ানে।  
চলমান পাতা-২/৭

 ৮ বছরে প্রায় ৪০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার কৃষি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্গাচাষীদের জন্য কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্পসুদে বিনা জামানতে কৃষি ঋণের ব্যবস'া করেছি।
১৯৯৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বয়স্কভাতা, বিধবা ও দুঃস'নারী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধাভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বিভিন্ন সামজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি চালু করেছে।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অধীনে চলতি বছর ১৪২টি কর্মসূচি বাসত্মবায়ন করা হচ্ছে।
এ কর্মসূচি বাবদ ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যনত্ম ৮ বছরে ২ লাখ ২৯ হাজার ১৬৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৩ হাজার ৬৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
হিজড়া এবং বেদে সম্প্রদায়ের জন্য ৬০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। চা শ্রমিকদের জন্য জন্য অনুদান ১০ কোটি থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ কোটি করা হয়েছে।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের অধীনে ড়্গুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাসত্মবায়ন করা হচ্ছে। পলস্নী সঞ্চয় ব্যাংকের ১০০টি শাখা উদ্বোধন করা হয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যনত্ম ১ লাখ ৪০ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২০১৯ সালের মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং গৃহায়ণ কর্মসূচিসহ অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে আরও ২ লাখ ৮০ হাজার পরিবার পুনর্বাসন করা হবে।
গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে প্রতি কেজি ১০ টাকা মূল্যে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে।  
প্রিয় দেশবাসী,
অমাদের সময়ে শিড়্গা ব্যবস'ায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। একটি যুগোপযোগী শিড়্গানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
২০১০ সালে আমরা মাধ্যমিক পর্যনত্ম ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কর্মসূচি শুরম্ন করি।
এ বছর ৪ কোটি ২৬ লাখ ৫৩ হাজার ৯২৯ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। গত আট বছরে সর্বমোট প্রায় ২২৫ কোটি ৪৩ লাখ ১ হাজার ১২৮টি বই বিতরণ করা হয়েছে। বিশ্বে বিনামূল্যে বই বিতরণের এমন নজির নেই।  
২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রথম শ্রেণী থেকে ডিগ্রি পর্যনত্ম ১ কোটি ৭২ লাখ ৯৩ হাজার ১১৮ জন শিড়্গার্থীর মধ্যে মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি বিতরণ করা হয়েছে।  
আমরা ২৬-হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছি। একইসঙ্গে এসব বিদ্যালয়ের ১ লাখ ২০ হাজার শিক্ষকের চাকুরি সরকারি করা হয়।
২০০৯ সাল থেকে এ পর্যনত্ম ৩১ হাজার ১৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরম্নম স'াপন করা হয়েছে।
বিদ্যালয়বিহীন ১ হাজার ১২৫টি গ্রামে নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স'াপন করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে এ পর্যনত্ম ৩৬৫টি কলেজ সরকারি করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেসব উপজেলায় সরকারি স্কুল বা কলেজ নেই, সেসব উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ করা হবে।
দেশের ৩১৫টি উপজেলায় কোন সরকারি স্কুল ছিল না। ইতোমধ্যে ১১৩টি উচ্চ বিদ্যালয় সরকারিকরণের সম্মতি প্রদান করা হয়েছে। আরও ২০২টি বিদ্যালয় পর্যায়ক্রমে সরকারি করা হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ঝরেপড়ার হার হ্রাস পেয়ছে। ২০০১-এ বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় গিয়ে শিক্ষার হার ৬৫ শতাংশ থেকে ৪৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল। বর্তমানে স্বাড়্গরতার হার ৭১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
২০০৯ সালে থেকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যনত্ম ৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স'াপন করা হয়েছে।
একই সময়ে বেসরকারি খাতে ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয় স'াপন এবং পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে মোট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৯টি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯৬টি।
চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে দু’টি নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আইন পাস করা হয়েছে।
যেসব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই, সেসব জেলায় একটি করে সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।
কারিগরি শিড়্গার সম্প্রসারণে ১ম পর্যায়ে ১০০টি উপজেলায় ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স'াপনের কার্যক্রম চলছে। ২য় পর্যায়ে ৩৮৯টি উপজেলায় আরও ৩৮৯টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স'াপন করা হবে।
কিশোরগঞ্জ, মাগুরা, মৌলভিবাজার ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১টি করে মোট ৪টি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট স'াপন করা হয়েছে। আরও ২৩টি জেলায় বিশ্বমানের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স'াপন করা হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগীয় সদরে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স'াপন করা হয়েছে।
চলমান পাতা-৩/৭

সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ এবং রংপুর বিভাগীয় সদরে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স'াপন করা হবে।
ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স'াপন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স'াপন করা হবে। ৮টি বিভাগীয় শহরে ৮টি মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স'াপন করা হবে।
প্রিয় দেশবাসী,
আমরা স্বাস'্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ১৬ হাজার ৪৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস'্যকেন্দ্র স'াপন করেছি। দরিদ্র্য মানুষকে বিনামূল্যে ৩০ ধরণের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
৬৪টি জেলা হাসপাতাল ও ৪২১টি উপজেলা হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আমরা একটি যুগোপযোগী স্বাস'্যনীতি প্রণয়ন করেছি। ৮ বছরে ১২ হাজার ৭২৮ জন সহকারী সার্জন এবং ১১৮ জন ডেন্টাল সার্জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ১৩ হাজার স্বাস'্যকর্মী ও প্রায় সাড়ে ১২ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মাতৃমৃত্যু প্রতি হাজারে ১.৮ জনে এবং শিশু মৃত্যু ২৯ জনে হ্রাস পেয়েছে।
গত ৮ বছরে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ২৪টি সরকারি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার শয্যা বাড়ানো হয়েছে।
২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণকালে দেশে মোট সরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ছিল ১৪টি যা বর্তমানে ৩৬ টিতে উন্নীত হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৬৯টি। সরকারি-বেসরকারি মিলে ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ২৮টি।  
আমার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের ঐকানিত্মক আগ্রহ এবং নিরলস প্রচেষ্টায় অটিজমের মতো মানবিক স্বাস'্য সমস্যাটি বিশ্বসমাজের দৃষ্টিতে আনা সম্ভব হয়েছে। অটিস্টিক শিশুদের সুরক্ষায় ২২টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে শিশু বিকাশ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
অচিরেই দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী ১ লাখ পরিবারের মধ্যে স্বাস'্যকার্ড বিতরণ করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে সারাদেশে সব দরিদ্র পরিবারের মধ্যে এই কার্ড বিতরণ করা হবে।
প্রিয় দেশবাসী,
আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
৪৮টি বৃহৎ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকায় হাতিরঝিল প্রকল্প, কুড়িল-বিশ্বরোড বহুমুখী উড়াল সেতু, মিরপুর-বিমানবন্দর জিলস্নুর রহমান উড়াল সেতু, বনানী ওভারপাস, মেয়র হানিফ উড়াল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।  
 বিমানবন্দর থেকে মতিঝিল পর্যনত্ম ২৬ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।
মেট্রোরেল নির্মাণ কাজও শুরম্ন হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন চালু হয়েছে। নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা সড়ক এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক ৪-লেনে উন্নীত করা হয়েছে। চন্দ্রা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার-লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে।
যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যনত্ম দেশের প্রথম ৮-লেনের মহাসড়ক চালু করা হয়েছে।
আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ দ্রম্নত এগিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় কাচপুর, ২য় মেঘনা এবং ২য় গোমতি সেতু নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরম্ন হবে।
 আওয়ামী লীগ সরকার রেলওয়েকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রম্নতগতিসম্পন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে। ইলেকট্রিক ট্রেন ও পাতাল ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।  
সরকার নৌ যোগাযোগ ব্যবস'ার উন্নয়নে যাত্রী পরিবহনের জন্য ৪৫টি নৌযান নির্মাণ ও চালু করেছে। দুইটি যাত্রীবাহী জাহাজ ও চারটি সি-ট্রাক জাতীয় নৌপরিবহনে সংযুক্ত হয়েছে। নৌ-পথের নাব্যতা বৃদ্ধি করতে ১৪টি ড্রেজার  কেনা হয়েছে।  আরও ১৭টি ড্রেজার ক্রয় প্রক্রিয়াধীন আছে।
৪টি অভ্যনত্মরীণ নদী বন্দর স'াপন করা হয়েছে। ঢাকা ও বরিশাল নদীবন্দরকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। কাঁচপুর, সন্দ্বীপ ও কুমিরায় নৌ-যানের ল্যান্ডিং সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
এক সময়ের মৃতপ্রায় মংলা বন্দর আমাদের সরকারের সময়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
চলমান পাতা-৪/৭

দড়্গিণের জেলা পটুয়াখালীতে পায়রা সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম শুরম্ন হওয়ার ফলে ঐ অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকা- বৃদ্ধি পাচ্ছে। পায়রা বন্দরের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগযোগ স'াপনের কার্যক্রম শুরম্ন হয়েছে।
আমরা বাংলাদেশ বিমানের জন্য ৬টি সুপরিসর উড়োজাহাজ সংগ্রহ করেছি। ২০১৮ সাল নাগাদ আরও ৪টি উড়োজাহাজ সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে।
পদ্মাসেতুর অপর প্রানেত্ম মাদারীপুরে বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণের সমীড়্গার কাজ শিগগিরই শুরম্ন হবে।
পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে জাতীয় পর্যটন নীতিমালা প্রণীত হয়েছে। পর্যটনখাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যটন পুলিশ গঠন করা হয়েছে।
গত ৮ বছরে আমাদের নিরলস প্রচেষ্টায় ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। ৫ হাজার ২৭৫টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এবং ৮২০০ ই-পোস্ট অফিস থেকে জনগণ ২০০ ধরণের ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যনত্ম অপটিক্যাল ফাইবার সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে এখন ১৩ কোটির বেশি মোবাইল সীম ব্যবহার করা হচ্ছে। ইন্টারনেট গ্রাহক প্রায় ৬ কোটি। চলতি বছরের মধ্যেই মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎড়্গেপণের লড়্গ্যে কাজ চলছে।
২৫ হাজার ওয়েবসাইট নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ওয়েব পোর্টাল “তথ্য বাতায়ন” চালু করেছি যা আনর্ত্মজাতিকভাবে পুুরস্কৃত হয়েছে।
আমাদের সরকার ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের বিকাশ ও বিসত্মৃতির জন্য সবচেয়ে উদার নীতি গ্রহণ করেছে।  
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ হয়েছে ২২৩ কোটি ডলার। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শেষ বছর ২০০৬ সালে যা ছিল মাত্র ৪৫.৬ কোটি মার্কিন ডলার।
সোনালি আঁশ পাটের ব্যবহার ও বাণিজ্য বাড়াতে পাট আইন ২০১৬ পাস করা হয়েছে। পাটনীতি ২০১৬ এবং বস্ত্রশিল্প প্রতিষ্ঠান আইন ২০১৬ এবং বস্ত্রনীতি ২০১৬ প্রণয়নের কাজ চলছে।
শিল্পায়ন এবং বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলছে। এতে এক কোটির বেশি লোকের কর্মসংস'ান হবে।
আমাদের সরকার মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিনত্মার স্বাধীনতাকে সর্বোচ্চ গুরম্নত্ব দেয়। আমরা দেশে সর্বপ্রথম জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালাসহ তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছি।  
বেসরকারিখাতে ৪৪টি টেলিভিশন, ২২টি এফএম রেডিও এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আমরা বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করে সরকার থেকে পাঁচ কোটি টাকার সিডমানি, ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকার অনুদান এবং ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছি। সাংবাদিকদের সহায়তায় এ পর্যনত্ম ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করেছি। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  
আমরা স'ানীয় সরকার কাঠামোকে শক্তিশালী করার ব্যবস'া নিয়েছি। কয়েক ধাপে উপজেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে নির্বাচন হয়েছে। স'ানীয় সরকারের প্রতিটি সত্মরেই সংরড়্গিত মহিলা আসনে নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।  
নারীর ড়্গমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ-স'ানীয় দেশগুলোর অন্যতম। রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পদে নারীর অবস'ানের দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ।
জাতীয় সংসদকে সকল কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছি। বিরোধীদলকে ধন্যবাদ, তারা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের অভিমত দিচ্ছেন, আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন।
সামরিক-অসামরিক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ১২৩ ভাগ পর্যনত্ম বাড়ানো হয়েছে। পদমর্যাদা বৃদ্ধি ও  ব্যাপক পদোন্নতির সুযোগ করে দিয়েছি।
জাতির পিতা প্রণীত ১৯৭৪ সালের প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে আর্মড ফোর্সেস গোল- ২০৩০ নির্ধারণ করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীকে অত্যাধুনিক যুদ্ধসরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে।
পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও সশস্ত্রবাহিনীর ঝুঁকিভাতা দেওয়া হচ্ছে।
চলমান পাতা-৫/৭

গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন বাড়িয়ে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে।
প্রিয় দেশবাসী,
জাতীয় ও আনত্মর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ উলেস্নখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। একদিনের আনত্মর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা পাকিসত্মান, ভারত, দড়্গিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়েকে পরাজিত করেছি।
আমাদের মেয়েরা এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলে আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত নারী ফুটবল চাপিম্পয়নশিপ প্রতিযোগিতায় আমাদের মেয়েরা এই প্রথমবারের মতো রানার্স-আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
জাতীয় নারী ক্রিকেট দল জায়গা করে নিয়েছে আগামী বছরের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে।
শারীরিক এবং মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন ছেলেমেয়েরা ক্রীড়াড়্গেত্রে অসামান্য সাফল্য দেখিয়ে চলেছেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন আনত্মর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তাঁরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছেন।
 আমরা এমডিজি অর্জন করেছি। বাংলাদেশ এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড এবং ওঞট-এর ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি’ পুরস্কার পেয়েছে।
আমরা জাতিসংঘ গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লড়্গ্যমাত্রা বা এসডিজি বাসত্মবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এসডিজি’র ৫৬টি লড়্গ্য অনত্মর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আমরা শানিত্ম এবং সহ-অবস'ানে বিশ্বাসী। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল বৈশিষ্ট্য “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়”।
এই মূলনীতির উপর ভিত্তি করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ড়্গেত্রে নতুন পথ রচনায় সড়্গম হয়েছি।
আলোচনার মাধ্যমে আমরা ভারতের সঙ্গে স'লসীমানা সমস্যার শানিত্মপূর্ণ সমাধান করেছি। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমারও শানিত্মপূর্ণ সমাধান করেছি। এরফলে বিশাল সমুদ্র এলাকায় সমুদ্রসম্পদ আহরণের পথ সুগম হয়েছে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখবে। কক্সবাজারে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছি। সেখানে সী এ্যাকুরিয়াম তৈরি করা হবে।
জাতিসংঘ শানিত্মরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শানিত্মরড়্গী প্রেরণকারী দেশ। আনত্মর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে এবং বিশ্বশানিত্ম প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
প্রিয় দেশবাসী,
দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন একটি গোষ্ঠী ইসলামের নামে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের মাধ্যমে দেশে অরাজক পরিসি'তি তৈরি করার অপচেষ্টা করছে।
ইসলাম শানিত্মর ধর্ম। ইসলাম ধর্মের নামে যারা মানুষ হত্যা করে তারা ইসলামের বন্ধু নয়, শত্রম্ন। ইসলাম কখনও মানুষ হত্যা সমর্থন করে না।
বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ তবে ধর্মান্ধ নয়। হাজার বছর ধরে এ দেশের মাটিতে সকল ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শানিত্মতে বসবাস করে আসছেন। যারা এই ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, তাদের ঠাঁই বাংলার মাটিতে হবে না।
আমি দেশের সকল ইমাম, মাদ্রাসাসহ সকল শিড়্গা প্রতিষ্ঠানের শিড়্গক, স'ানীয় মুরম্নব্বি, আনসার-ভিডিপি সদস্য এবং অভিভাবককে জঙ্গি তৎপরতার বিরম্নদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিশেষ করে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান, আপনাদের সনত্মানের প্রতি নজর রাখুন। তাদের এমনভাবে পরিচালিত করম্নন, যাতে তারা ভুল পথে পা না বাড়ায়।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ অব্যাহত আছে।
প্রিয় দেশবাসী,
আমরা চলতি মেয়াদের তিন বছর অতিক্রম করলাম। আমাদের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস'া আছে।
আপনারা জানেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস'া বাতিল করে দেয়। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আমরা অবৈধ পথে ড়্গমতা দখলের পথ রম্নদ্ধ করেছি।
চলমান পাতা-৬/৭

২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকলদলের অংশগ্রহণে নির্বাচনকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রসত্মাব দিয়েছিলাম।
কারণ আমরা সবসময়ই সুষ্ঠু এবং নিরপেড়্গ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পড়্গে। সংবিধানের আওতায় আমরা সবধরণের ছাড় দিতেও প্রস'ত ছিলাম। এমনকি বিএনপি যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক, তাও আমরা দিতে চেয়েছিলাম।
কিন' বিএনপি নেতৃত্ব সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি বরং উনি সন্ত্রাসীবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেন।
পেট্রোল বোমা, অগ্নিসংযোগ ও বোমা হামলা করে মানুষ হত্যায় মেতে উঠলেন। শতাধিক মানুষ হত্যা করলেন। হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধবংস করলেন।
বিএনপি জোট নির্বাচন বর্জন করলেও উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক দল এবং প্রার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠুভাবে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের সময় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশিস্নষ্ট সংস'াগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যসত্ম ছিল। সরকার কোন ধরণের হসত্মড়্গেপ করেনি।
৯২দিন পার্টি কার্যালয়ে আরাম-আয়েশে অবস'ান করে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মার্চ মাস পর্যনত্ম আন্দোলনের নামে বিএনপি নেত্রী আবার জ্বালাও-পোড়াও-সন্ত্রাসী কর্মকা- উসকে দেন।
এ তিন মাসে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীদের হাতে ২৩১ জন নিরীহ মানুষ নিহত এবং ১ হাজার ১৮০ জন আহত হন। তারা ২ হাজার ৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেল গাড়ি ও ৮টি লঞ্চে আগুন দেয়।  ৭০টি সরকারি অফিস ও স'াপনা ভাংচুর এবং ৬টি ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
দেশবাসী তাদের এ সন্ত্রাসী কর্মকা- প্রত্যাখ্যান করেছেন। জনগণ এ ধরণের কর্মকা-ের পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা আশা করি সকল রাজনৈতিক দল মহামান্য রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে গঠিত নির্বাচন কমিশনের উপর আস'া রাখবেন।
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিবেন এবং দেশে গণতান্ত্রিক ধারাকে সমুন্নত রাখতে সহায়তা করবেন।
প্রিয় দেশবাসী,
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কথায় নয়, কাজে বিশ্বাস করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিচালনা থেকে শুরম্ন করে এ দেশের যত উলেস্নখযোগ্য অর্জন, তার সবগুলো এনেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। জাতির পিতা আমাদের মাথা নত না করতে শিখিয়েছেন। আমরা সকল বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করব।
আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের মর্যদা অর্জন করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ব, ইনশাআলস্নাহ।    
আসুন, দলমত নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে নিজেদের নিয়োজিত করি এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত-সমৃদ্ধ, সুন্দর এবং বাসযোগ্য বাংলাদেশ উপহার দেই।
সবাই ভালো থাকুন, সুস' থাকুন, মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে এ প্রার্থনা করছি।
সবাইকে আবারও আনত্মরিক ধন্যবাদ।
খোদা হাফেজ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
#

নজরম্নল/মাহমুদ/মোশারফ/সেলিমুজ্জামান/২০১৭/১৯৩০ ঘণ্টা

তথ্যবিবরণী                                                                                         নম্বর :  ১৩৭

দরিদ্র শিড়্গার্র্থীদের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে পরিকল্পনা মন্ত্রীর শিড়্গা বৃত্তি ঘোষণা

নাঙ্গলকোট (কুমিলস্না), ২৯ পৌষ (১২ জানুয়ারি) :

    পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুসত্মফা কামাল এলাকার একজন শিশুও যাতে শিড়্গা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য তাঁর নিজস্ব তহবিল থেকে নাঙ্গলকোট উপজেলার দরিদ্র শিড়্গার্থীদেরকে প্রতিবছর ২৫ লাখ টাকা শিড়্গা বৃত্তি প্রদান করার সিদ্ধানত্ম ঘোষণা করেছেন।

    মন্ত্রী আজ কুমিলস্না জেলার নাঙ্গলকোটে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলড়্গে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নাঙ্গলকোট উপজেলা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ ঘোষণা দেন।

    অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা দড়্গিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন কালু, নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক মো. রফিক, নাঙ্গলকোট হাছান মেমোরিয়াল কলেজ অধ্যড়্গ ছাদেক হোসেন ভূইয়া, পৌর মেয়র আবদুল মালেক এবং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুর রাজ্জাক সুমন বক্তৃতা করেন ।

    পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রতিটি মানুষকে যোগ্য করে গড়ে তোলার বিকল্প নেই। জীবনে বড় হওয়ার জন্য বিদ্বান হওয়ার যেমন প্রয়োজন আছে তেমনি দেশকে আত্মনির্ভরশীল করতে শতভাগ শিড়্গা অর্জন অপরিহার্য। বর্তমান সরকার শতভাগ শিড়্গা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছেন। ইতোমধ্যে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভিশন টুয়েন্টি টুয়েন্টি ওয়ান সফলজনকভাবে বাসত্মবায়ন এগিয়ে নিচ্ছি। অগ্রগতির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে ড়্গুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে বিশ্বের বিশতম উন্নত দেশ। তিনি বলেন, প্রত্যেক জাতির জন্য একটা সময় আসে- বাংলাদেশের জন্যও সেই সময়টি এসেছে। আমাদের কাজে লাগাতে হবে ।

    পরিকল্পনা মন্ত্রী ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ছাত্রলীগের ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস,

Todays handout (9).docx