তথ্যবিবরণী নম্বর : ৩০৮২
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জাতির উদ্দেশে ভাষণ
ঢাকা, ২৪ কার্তিক (৮ নভেম্বর) :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা উপলক্ষে আজ বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তাঁর ভাষণের পূর্ণ বিবরণ নি¤œরূপ :
‘‘প্রিয় দেশবাসী
আসসালামু আলাইকুম
আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার জন্য আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। একই সাথে নির্বাচনের প্রস্তুতির ওপর কিছুটা আলোকপাত করবো। নির্বাচন পরিচালনায় সকল নাগরিকের সহযোগিতার আহ্বান জানাবো।
শুরুতেই আমি স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। যেসব বীর সন্তান স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, সম্ভ্রম বিসর্জন দিয়েছেন তাদেরকে স্মরণ করছি। স্মরণ করছি ৫২’র ভাষা শহিদদের যাদের রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মায়ের ভাষা; অর্জিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
আন্দোলন, আত্মদান আর সংগ্রামের ফসল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ভাষা আন্দোলনে আত্মদানের প্রত্যয় নিয়ে স্বাধিকার আন্দোলন। স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেরণায় মুক্তি সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ অর্জন লাল-সবুজ পতাকার একখ- বাংলাদেশ। চরম ক্ষুধা-দারিদ্র্য, অবনতকর আর্থসামাজিক অবস্থান এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত ভৌত অবকাঠামো নিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম। নবীন সে দেশটি আজ উন্নত বিশ্ব অভিমুখে অভিযানে দীপ্তপদে এগিয়ে চলছে। উন্নয়নের আর একটি আরোধ্য সোপান গণতন্ত্রের মজবুত ভিত্তি। সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থিতিশীল ও দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্য অর্জনে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে সমান্তরাল পথ ধরে অগ্রসর হতে হয়। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় নির্বাচন একটি নির্ভরশীল বাহন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন তা এগিয়ে নিয়ে যেতে জনগণের কাছে হাজির হয়েছে। জনগণের হয়ে সব রাজনৈতিক দলকে সে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের গণতন্ত্রের ধারা এবং উন্নয়নের গতিকে সচল রাখার আহ্বান জানাই।
প্রিয় দেশবাসী
আমরা একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইন সংস্কার, ভোটার তলিকা প্রস্তুতসহ ৭টি করণীয় বিষয় স্থির করে ২০১৭ সালে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছিলাম। সংলাপের মাধ্যমে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক সংস্থা, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রী সংগঠনের কাছে কর্মপরিকল্পনাটি তুলে ধরেছিলাম। তাদের পরামর্শ ও সুপারিশ বিচার বিশ্লেষণের পর গ্রহণযোগ্য বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যেমন- কতিপয় আইন ও বিধি সংশোধন করা হয়েছে। সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ তালিকা প্রকাশ করা হযেছে। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রের বাছাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৭৫টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কর্মকর্তাগণের সক্ষমতা অর্জন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। প্রথমবারের মতো পোলিং এজেন্টগণের প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
২৮ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইতিমধ্যে নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কমিশনারগণ সংবিধানের আলোকে সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করার শপথ নিয়েছেন এবং তাতে তাঁরা নিবিষ্ট রয়েছেন। নির্বাচনী সামগ্রী ক্রয় এবং মুদ্রণের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে পারস্পরিক পরামর্শ আদান-প্রদান করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে নিবেদিত রয়েছেন। আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেছি।
--২--
প্রিয় দেশবাসী
নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৭ লাখ কর্মকর্তা নিয়োগের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী থেকে ৬ লক্ষাধিক সদস্য মোতায়েন করা হবে। তাদের মধ্যে থাকবে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যগণ। তাদের দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও একাগ্রতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হলে দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অসামরিক প্রশাসনকে যথা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
প্রিয় দেশবাসী
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহের জাগরণ ঘটে। তাদের বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা আর উচ্ছ্বাসে গোটা দেশ উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। রাজনীতিবিদদের কৌশল প্রণয়ন, প্রার্থীদের নির্ঘুম প্রচারণা, সমর্থকদের জনসংযোগ, ভোটারদের হিসেব-নিকেশ, হাটবাজারে মিছিল-স্লোগান, পোস্টারে অলি-গলি ছয়লাব, চা দোকানে বিতর্কের ঝড়, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, প্রশাসনে রদবদল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক প্রস্তুতির ঘটনা ঘটে। ভোটের দিনে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষ আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার মধ্যে আনন্দঘন ও উসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
২০১৮ সাল সেই নির্বাচনের একটি বছর। নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে দিয়েছে। সুশীল সমাজ মতামত প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে। গণমাধ্যমে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত, বক্তব্য, প্রবন্ধ প্রতিবেদন, আলোচনা-সমালোচনা ও সুপারিশ প্রকাশ করা হচ্ছে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নির্বাচন নিয়ে প্রতিনিয়ত টক-শো প্রচার করে যাচ্ছে। সব সংবাদ মাধ্যম নির্বাচন নিয়ে বিশেষ খবর ও প্রতিবেদন প্রচার করছে। দেশের প্রখ্যাত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দলগতভাবে অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরামর্শ নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপে মিলিত হয়েছেন। সভা-সমাবেশ নির্বাচনী বক্তব্যে উত্তপ্ত হচ্ছে। দেশি-বিদেশি বহুসংখ্যক সংগঠন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশব্যাপী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রিয় দেশবাসী
জাতির এমন উচ্ছ্বসিত প্রস্তুতির মধ্যখানে দাঁড়িয়ে আমি প্রত্যাশা করবো, অনুরোধ করবো এবং দাবি করবো : প্রার্থী এবং তার সমর্থক নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি মেনে চলবেন। প্রত্যেক ভোটার অবাধে এবং স্বাধীন বিবেকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করবেন। স্ব স্ব এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং নির্বাচিত প্রতিনিধি ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণে সহায়তা করবেন। পোলিং এজেন্টগণ ফলাফলের তালিকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। নির্বাচনী কর্মকর্তাগণ নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনে অটল থাকবেন। নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটগণ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভোটকেন্দ্র, ভোটার প্রার্থী, নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। গণমাধ্যমকর্মী বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করবেন। পর্যবেক্ষকগণ নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা মেনে দায়িত্ব পালন করবেন এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সামগ্রিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানের আওতায় রাখবেন। এভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে।
প্রিয় দেশবাসী
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় জনগণের মালিকানার অধিকার প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়; নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্র তৈরি হয়। এমন নির্বাচনে দেশের সব রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণ করার জন্য আবারো আহ্বান জানাই। তাদের মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে মতানৈক্য বা মতবিরোধ থেকে থাকলে রাজনৈতিকভাবে তা মীমাংসা করার অনুরোধ জানাই। প্রত্যেক দলকে একে অপরের প্রতি সহনশীল, সম্মানজনক এবং রাজনীতিসুলভ আচরণ করার অনুরোধ জানাই। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে প্রার্থীর সমর্থকদের সরব উপস্থিতিতে অনিয়ম প্রতিহত হয় বলে আমি বিশ্বাস করি। প্রতিযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন কখনও প্রতিহিংসা বা সহিংসতায় পরিণত না হয়, রাজনৈতিক দলগুলোকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাই।
--৩--
প্রিয় দেশবাসী
ভোটার, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, প্রার্থী, প্রার্থীর সমর্থক এবং এজেন্ট যেন বিনা কারণে হয়রানির শিকার না হয় বা মামলা-মোকদ্দমার সম্মুখীন না হন তার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর কঠোর নির্দেশ থাকবে। দলমত নির্বিশেষে সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, ধর্ম, জাত, বর্ণ ও নারী-পুরুষভেদে সকলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ভোট শেষে নিজ নিজ বাসস্থানে নিরাপদে অবস্থান করতে পারবেন। নির্বাচনী প্রচারণায় সকল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ পাবে। সকলের জন্য অভিন্ন আচরণ ও সমান সুযোগ সৃষ্টির অনুকূলে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। এসব নিয়ে শিগগিরই প্রয়োজনীয় পরিপত্র জারি করা হবে।
প্রিয় দেশবাসী
নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কমিশনের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রার্থীদের তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং নির্বাচনের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি আদান-প্রদানের পদ্ধতি সংক্রান্ত সফটওয়্যার ও প্রোগ্রাম আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। সরাসরি অথবা অনলাইনেও মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান রাখা হয়েছে।
পুরাতন পদ্ধতির পাশাপাশি ভোট গ্রহণে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অনেকগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ ভোট গ্রহণে ইভিএম-এর ব্যবহার সফল হয়েছে। জেলা এবং অঞ্চল পর্যায়ে প্রদর্শনীর মাধ্যমে ইভিএম-এর উপকারিতা সম্পর্কে ভোটারগণকে অবহিত করা হয়েছে। ইভিএম ব্যবহারে তাদের মধ্যে উৎসাহব্যঞ্জক আগ্রহ দেখা গিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি ইভিএম ব্যবহার করা গেলে নির্বাচনের গুণগতমান উন্নত হবে এবং সময়, অর্থ ও শ্রমের সাশ্রয় হবে। সে কারণে শহরগুলোর সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা থেকে দ্বৈবচয়ন প্রক্রিয়ায় বেছে নেয়া অল্প কয়েকটিতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে।
প্রিয় দেশবাসী
আমি এখন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ দফা (৩) উপ-দফা (ক)-এর বরাতে এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করছি।
(ক) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ- ১৯ নভেম্বর ২০১৮ সোমবার
(খ) মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ- ২২ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
(গ) প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ- ২৯ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
(ঘ) ভোট গ্রহণের তারিখ- ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ রবিবার
প্রিয় দেশবাসী
দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় আপনাদের সহযোগিতা, সাহায্য এবং সমর্থন কামনা করি। জাতির আকুল আগ্রহের এ জায়গায় সকলকে সাথে নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সফল হব ইনশাল্লাহ।
২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল হোক- সার্থক হোক।
আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ চিরস্থায়ী হোক।’’
#
মাহমুদ/মোশারফ/পারভেজ/সেলিমুজ্জামান/২০১৮/১৯৮০ ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর : ৩০৮১
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী হাউজ অভ্ কমন্সের স্পিকারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন
ঢাকা, ২৪ কার্তিক (৮ নভেম্বর) :
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আজ যুক্তরাজ্যের হাউজ অভ্ কমন্সের স্পিকার জন বারকাউ (ঔড়যহ ইবৎপড়)ি এর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ‘উইমেন এমপি’স অভ্ দ্য ওয়ার্ল্ড’ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ওয়েস্ট মিনিস্টার হলে পৌঁছালে হাউজ অভ্ কমন্সের স্পিকার তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। সকালে হাউজ অভ্ কমন্সের চেম্বার হলে ‘উইমেন এমপি’স অভ্ দ্য ওয়ার্ল্ড’ সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা হয়।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা দুই দেশের পার্লামেন্টের বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন এবং ‘উইমেন এমপি’স অভ্ দ্য ওয়ার্ল্ড’ সম্মেলনের সফলতা কামনা করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ অধিশাখা থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
#
তারিক/সেলিম/পারভেজ/জয়নুল/২০১৮/২০৩০ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর : ৩০৮০
ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করছে সরকার
--- আইসিটি মন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ কার্তিক (৮ নভেম্বর) :
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষদের প্রতিবন্ধিত্ব দূরীকরণে বাংলা ভাষাভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করতে সফটওয়্যার তৈরি করছে সরকার। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক কিন্তু বলতে বা শোনতে অসমর্থ এমন ব্যক্তিরা উপকার পাবেন।
মন্ত্রী আজ রাজধানীর কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ার সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কের সভাকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের আওতায় সফটওয়্যারটি রূপরেখা প্রণয়নের লক্ষ্যে ‘প্রতিবন্ধীদের জন্য সফটওয়্যার উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালয়’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজ, গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ জিয়া উদ্দিন অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। আমরা বাংলা ভাষার নেতৃত্ব দিচ্ছি। তাই আমাদেরকে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের উপযোগী সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে’। তিনি আজকের কর্মশালায় অংশীজনদের প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষের ব্যবহারের উপযোগী সফটওয়্যার তৈরি করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ‘গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি সফট্ওয়্যার প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে সাইন ল্যাংগুয়েজ, মুখভঙ্গি বা জেসচারকে ইউনিকোড টেক্সটে রূপান্তর এবং তা থেকে অটোমেটিক স্পিচ জেনারেট করা। এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা একটি মোবাইল ফোনের ক্যামেরার সামনে বাংলা সাইন ল্যাংগুয়েজ প্রদর্শন করবে অর্থাৎ তার হাত, হাতের আঙুল, মুখম-লের নড়াচড়ার মাধ্যমে সাইন ল্যাংগুয়েজ প্রদর্শন করবে, মোবাইলের অ্যাপ এই সাইনকে রিকগনাইজ করবে এবং তাকে বাংলা ইউনিকোড টেক্সট হিসেবে প্রদর্শন করবে, একই সঙ্গে এই টেক্সট থেকে বাংলা স্পিচ জেনারেট হবে। এর নাম হবে ‘অটোমেটিক রিয়েল টাইম বাংলা সাইন-জেসচার ডিটেকশন অ্যান্ড টেক্সট-স্পিচ জেনারেশন সিস্টেম (ভাইস-ভার্সা)। এই সিস্টেমটি নিন্দিষ্ট কোনো ডিভাইস ডিপেনডেন্ট হবে না। সাধারণ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল বা সমতুল্য ডিভাইস দিয়ে এই কাজ করা যাবে। এই সিস্টেম মোশন ইমেজ প্রসেসিং এর মাধ্যমে প্রস্তুত করা হবে। যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষ করে মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
এছাড়া সাধারণত একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির দৈনন্দিন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাজে যতগুলো পরিস্থিতি (সেটিংস) তৈরি হয়, প্রায় সবগুলোই এর আওতাভুক্ত থাকবে। যেমন, চিকিৎসকের সঙ্গে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ ও রোগ বর্ণনা, পুলিশের কাছে আইনি সহায়তা ও পরিস্থিতি বর্ণনা, ক্লাসরুম, রেস্টুরেন্ট, দোকান, এয়ারপোর্ট, বিনোদন স্থান, পারিবারিক আলাপচারিতা, কুশল জিজ্ঞাসা প্রভৃতি সেটিংস এর সময় সাইন টু টেক্সট অ্যান্ড স্পিচ জেনারেট করতে সক্ষম হবে।
কর্মশালায় বুয়েট, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ জাতীয় প্রতিবন্ধী সংস্থা ও সিডিডির প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
#
শহিদুল/সেলিম/রফিকুল/জয়নুল/২০১৮/২০১০ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর : ৩০৭৯
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল বলেছেন, শিক্ষা বিবেক, বোধ ও মানবিক গুণাবলি সমৃদ্ধ নাগরিক সৃষ্টির পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুযোগ সৃষ্টি করে; যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাই বর্তমান সরকার একদিকে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করছে অন্যদিকে প্রান্তিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করছে।
মন্ত্রী আজ চান্দিনার দোল্লাই নবাবপুর কলেজকে সরকারিকরণ করায় কলেজ প্রাঙ্গণে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাকারিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ, চান্দিনা উপজেলা চেয়ারম্যান বাবু তপন বকশী এবং কলেজ অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান প্রমুখ।
তথ্যবিবরণী নম্বর : ৩০৭৮
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি হল ধর্মনিরপেক্ষতা ও বৈচিত্র্যকে লালন করা। আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব ঢাকা লিট ফেস্টও শুরু থেকেই সেই ধর্মনিরপেক্ষতা ও বৈচিত্র্যের মূলনীতিকে ধারণ করে আসছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছেন। তিনি শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিজ্ঞান শিক্ষার পাশাপাশি শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চাকে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেছেন এবং তৃণমূল পর্যায়ে সংস্কৃতি চর্চা বিকাশ ও প্রসারে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে যথোপযুক্ত নির্দেশনা দিয়েছেন।’
মন্ত্রী আজ রাজধানীর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাংলা একাডেমির আয়োজন আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব ‘ঢাকা লিট ফেস্ট-২০১৮’এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
উদ্বোধন পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা লিট ফেস্টের তিন পরিচালক কাজী আনিস আহমেদ, আহসান আকবর ও সাদাফ সাজ। বিদেশি অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী লেখক অ্যাডাম জনসন ও প্রখ্যাত ভারতীয় অভিনেত্রী ও পরিচালক নন্দিতা দাস।
তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের ৯০টি অধিবেশনে দেশ-বিদেশের প্রায় তিন শতাধিক কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী, চিন্তাবিদ, গবেষক এবং আলোচক অংশ নিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা লিট ফেস্টের কি-স্পন্সর হিসেবে থাকছে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড এবং টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকছে ঢাকা ট্রিবিউন ও বাংলা ট্রিবিউন।