তথ্যবিবরণী নম্বর: ৪৪৯৪
বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে গাজা যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ
-- পররাষ্ট্রমন্ত্রী
লন্ডন, ২ মে:
শান্তিপূর্ণ ও সংঘাতমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠা এবং গাজা ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ।
যুক্তরাজ্যের রাজধানীতে গতকাল বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে সরকারি সফরে ইউরোপে অবস্থানরত পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজা এবং ইউক্রেনসহ বিশ্বব্যাপী সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পুনরুদ্ধার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিকটবর্তী ঐতিহাসিক চার্চিল হলে এ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল প্রধান অতিথি এবং হাউস অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট; যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও জাতিসংঘের এফসিডিও মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ; পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণ বিষয়ক ছায়াসচিব স্টিভ রিড এবং বাংলাদেশ নিয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী এমপি বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর উপস্থিতিতে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান তার বক্তব্যে জাতির পিতা, সকল শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সমর্থনের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার, সেদেশের নাগরিক এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবংএবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উষ্ণ অভ্যর্থনাকারী এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশকারী প্রয়াত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনকে কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেন এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসামান্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বের নজর এখন ২০৩০ সালের মধ্যে ৯ম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ' হতে চলা আমাদের দেশের দিকে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান এ সময় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন পত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি ‘বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং 'বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড' চালু করার জন্য যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের প্রশংসা করেন।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। পেনি মর্ডান্ট এমপি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। লর্ড তারিক আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তারা প্রত্যেকেই যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ও সমাজে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন ও বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের উন্নয়নে অবিচল অংশীদার থাকবে।
জাতির পিতা ও একাত্তরের শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়নে যুক্তরাজ্য আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। চলতি মে মাসের শেষের দিকে দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো হোম অফিস সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
‘মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন’ প্রকাশনা উদ্বোধন, ‘বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ’ এবং
‘বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহ্মুদ এ দিন যুক্তরাজ্যের স্পিকার, হাইকমিশনার এবং বিশিষ্ট অতিথিদের সাথে নিয়ে ‘মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন’ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন এবং বাংলাদেশের দুই মহান বন্ধু লর্ড মারল্যান্ড এবং লর্ড স্বরাজ পলের হাতে যথাক্রমে বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর বিশেষ প্রদর্শনী, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিল্পীদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি শাড়ি প্রদর্শনীতে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ, হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত, কমনওয়েলথ ও ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) সিনিয়র প্রতিনিধি, কূটনীতিক, থিংক ট্যাংক, মিডিয়া, একাডেমিয়া এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সদস্যরা যোগ দেন।
#
আকরাম/সায়েম/শফি/সঞ্জীব/শামীম/২০২৪/২০০০ঘণ্টা
তথ্যববিরণী নম্বর : ৪৪৯৩
জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি ২০২৪ একটি সময়োপযোগী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি
--- শিল্পমন্ত্রী
ঢাকা, ১৯ বৈশাখ (২ মে):
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি ২০২৪’ একটি অত্যন্ত সময়োপযোগী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গুরুত্বপূর্ণ নীতি বা দলিল। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ নীতি বা অভিধানে এমন কিছু নেই যা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই- সে বিষয়ে সুস্পষ্ট পথনির্দেশ দেয়া হয়েছে। জাতীয় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সকল দিকনির্দেশনা এতে দেয়া রয়েছে।
মন্ত্রী আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভাল হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আয়োজিত জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি ২০২৪ সম্পর্কিত অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি ঘোষণা করেন যেটি ছিল এর উপযুক্ত সময়। তিনি সঠিক সময়ে সঠিক দাবি তুলেছিলেন ও সঠিক কৌশল অবলম্বন করেছিলেন বলে এটি সার্থক হয়েছে। তিনি বলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানীসহ অনেক নেতাই এদেশের স্বাধীনতা চেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কেউই জাতির পিতা বা বঙ্গবন্ধু হতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ের স্পন্দন বুঝতেন। তাঁর সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশ স্বাধীন হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি ২০২৪ একটি ‘বিজনেস কনস্টিটিউশন’ বা ‘ব্যবসা সংবিধান’। এ মূল্যবান দলিল এদেশকে অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশ ছোট হলেও সম্পদের কোনো ঘাটতি নেই। ভূমি, সড়ক অবকাঠামো, নদী, সমুদ্র ও আকাশপথ-সহ আমাদের সব ধরনের সম্পদ বিদ্যমান। প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণ। তিনি আরো বলেন, উৎপাদিত পণ্য দ্রুততম সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে অভ্যন্তরীণ বাজারসহ সারাবিশ্বে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে এ নীতি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি একটি ব্যতিক্রমধর্মী নীতি এ কারণে যে এখানে নীতি বাস্তবায়নে সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং একইসঙ্গে তা সমাধানের পথ বাতলে দেয়া হয়েছে। মন্ত্রী এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এ যুগোপযোগী নীতি প্রণয়নে ভূমিকা রাখায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম (টিটু)। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন ফেডারেশন অভ বাংলাদেশ চেম্বারস অভ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এর প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক, বিশিষ্ট নারী ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও শিক্ষাবিদ ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, ডিপি ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ লিমিটেড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শামীম উল হক এবং পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাশরুর রিয়াজ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। ‘ÔNational Logistics Policy 2024: An OverviewÕ শীর্ষক উপস্থাপনা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্বাহী সেলের মহাপরিচালক শাহিদা সুলতানা।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি ‘ভিশন ২০৪১’ এর ভিত্তিস্বরূপ। এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি যাতে সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর স্টেটম্যানশিপের বড় উদাহরণ। তিনি বলেন, প্রথাগত ধ্যানধারণার বাইরে এসে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে। অল্প সময়ে নির্ভুলভাবে তৈরি এ নীতি একটি লিভিং ডকুমেন্ট। সবচেয়ে বড় কথা, এটি নিজের দেশ ও নিজেদের মেধায় প্রণীত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নীতি।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম (টিটু) বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ‘জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি ২০২৪’ বাস্তবায়ন। তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের মেয়াদ ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি-এ সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নীতিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পরে মন্ত্রী সম্মানিত অতিথি ও আলোচকবৃন্দের উপস্থিতিতে LOGISTIC শীর্ষক প্রকাশনা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং Logistics Bangladesh এর ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন।
#
ফয়সল/সায়েম/শফি/সঞ্জীব/জয়নুল/২০২৪/২০২০ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর: ৪৪৯২
বিবি রাসেলের ফ্যাশন শো ‘দ্য ম্যাজিকাল থ্রেডস অভ্ বাংলাদেশ’- এ মন্ত্রমুগ্ধ আম্মান
আম্মান (জর্ডান), ২ মে:
মহান স্বাধীনতার ৫৩ তম বার্ষিকী এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে জর্ডানে গার্মেন্টস খাতে কর্মরত বাংলাদেশি মহিলা শ্রমিকদের অংশগ্রহণে আম্মানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস একটি অনন্য ফ্যাশন শো’র আয়োজন করেছে। বাংলাদেশি ফ্যাশন আইকন বিবি রাসেলের পরিচালনায় গত ৩০ এপ্রিল আম্মানের একটি হোটেলে এ ফ্যাশন শো-এর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ওয়াজিহ তাইয়েব আজাইজেহ। এছাড়া আম্মানস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং প্রটোকল প্রধানসহ জর্ডানের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন। পোশাক শিল্প, ইলেকট্রনিক্স, ফার্মাসিউটিক্যালস, আইটি এবং জাহাজ নির্মাণের মতো বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব বাজারে একটি বিশিষ্ট অবস্থান দখল করেছে এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ।
জর্ডানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান বলেন, গার্মেন্টস শিল্প থেকে মেয়েদেরকে বিবি রাসেলের মডেল হিসেবে এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ ফ্যাশন শো’তে সম্পৃক্ত করা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস। বাংলাদেশের মানুষের জীবন, উৎসব, আধ্যাত্মিকতা, পোশাক এবং সামাজিক সম্প্রীতি ফ্যাশন শো’তে প্রতিফলিত হয়েছে।
কিংবদন্তি বাংলাদেশি ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের ‘দ্য ম্যাজিকাল থ্রেডস অভ্ বাংলাদেশ’ শিরোনামের ফ্যাশন শো’তে অতিথিরা মুগ্ধ হন । শো’তে মডেল হিসেবে ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি ও জর্ডানের নারী পোশাক শ্রমিকরা।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে উঠে আসা মহিলা পোশাক শ্রমিকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়া বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রগতির চাবিকাঠি বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।
#
নাহিদা/শফি/সঞ্জীব/শামীম/২০২৪/২০১৫ঘণ্টা
Handout Number : 4491
In ADB’s 57th annual meeting at Tbilisi Finance Minister Mahmood
Ali asks for scaling up concessional finance and seeks policy based lending supports for consolidating reforms
Dhaka, 2 May:
Finance Minister Abul Hassan Mahmood Ali is currently leading a seven-member Bangladesh delegation to the 57th annual meeting of ADB at Tbilisi in the capital of Georgia. On his first day of engagement into the ADB Meeting, Minister attended a High-level panel titled “Harvesting hope; ensuring a food secure, climate resilient Asia and the Pacific” alongside a distinguished panel of speakers.
In his remarks, Minister highlighted how Bangladesh despite a land scarce country emerged globally as the third largest producer of rice and vegetables by increasing food production, supporting agriculture and expanding social safety programmes under the guidance of Prime Minister Sheikh Hasina’s inclusive development policies. Minister sought increased support from the development partners including ADB to improve Bangladesh’s food distribution system, develop market connectivity and scale up innovation in agriculture in the wake of climate challenges.
On the same day, Minister met ADB President to discuss bilateral issues. In the meeting with President, Minister sought policy based lending (PBL) supports for undertaking trade policy, logistics, and climate and LDC graduation reforms.
He also requested ADB to increase concessional climate finance, facilitate cross-border energy trade, assist Bangladesh in its initiatives for tax sector reform, undertaking projects for river restoration and developing some of the thrust sectors of its economy such as jute, leather and tourism towards Bangladesh’s drive for diversifying economy. In response, President ADB praised Bangladesh government’s strong climate and development agenda, and assured ADB’s continious support, both in sovereign and non-sovereign resources in Bangladesh’s prioritised sectors.
#
Sayeam/Shapi/Sanjib/Joynul/2023/2000 hour
তথ্যববিরণী নম্বর : ৪৪৯০
নতুন প্রজন্মের জন্য সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে নবীন কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করার আহ্বান পূর্তমন্ত্রীর
ঢাকা, ১৯ বৈশাখ (২ মে):
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছেন। তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে একটি প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা শেখ হাসিনার এই লড়াইয়ে পরস্পরের সাথী হব।
আজ পূর্ত ভবনের সেমিনার কক্ষে ৪১তম বিসিএস (গণপূর্ত) ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী নতুন কর্মকর্তাদের স¦াগত জানিয়ে বলেন, দেশপ্রেম থাকলে যেকোনো কাজ করা সম্ভব। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে সবাইকে দায়িত্বশীল হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
মনুষ্য সন্তানদের দ্বারা পৃথিবীর সব কাজই সম্পন্ন করা সম্ভব। যারা চাঁদে যাচ্ছে, ইন্টারনেট আবিষ্কার করেছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে যারা পৃথিবীকে সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন, তারা সবাই আমাদের মতো মানুষ ছিলেন। সুতরাং তারা যদি পারেন, আমরা কেন পারবো না? বলেন তিনি।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এটি অর্জন করতে পেরেছি। বর্তমান প্রজন্মকেও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য রাষ্ট্র রেখে যেতে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হবে। কর্মক্ষেত্রে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।
ঠিকাদাররা কাজের গুণগত মান বজায় রেখে কাজ সম্পন্ন করছেন কি না তা সঠিকভাবে তদারকি করতে গণপূর্তের নতুন কর্মকর্তাদের তিনি পরামর্শ দেন। এ সময় প্রত্যেক কর্মকর্তাকে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নিষ্ঠার সাথে কাজ করলে সততার জন্য আহাজারি করতে হয় না, সততা অটোমেটিক্যালি চলে আসে, দেশপ্রেম নিয়ে ভাবতে হয় না, দেশপ্রেম আপনা আপনি আসে, ভবিষ্যৎ বংশধরদের কথা চলে আসে। তিনি সময়ের কাজ সময়ে, দিনের কাজ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন। কোনো কাজ অন্যের জন্য ফেলে না রেখে দ্রুততার সাথে নিজ দায়িত্বে সম্পাদনের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে মন্ত্রী বলেন, সকল কাজে পরিবেশের সুরক্ষা সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। বিশ্বব্যাপী পরিবেশ নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তা গুরুত্বের সাথে আমাদের বিবেচনা করতে হবে। কারণ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বাংলাদেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছে।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শামীম আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নবীরুল ইসলাম। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মঞ্জুরুর রহমান। প্রসঙ্গত ৪১তম বিসিএসের মাধ্যমে গণপূর্ত ক্যাডারে মোট ৪৭ জন কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। এর মধ্যে সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ৩৪ জন এবং সহকারী প্রকৌশলী (ইএম) ১৩ জন।
#
রেজাউল/সায়েম/শফি/রফিকুল/জয়নুল/২০২৪/১৯২০ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর: ৪৪৮৯
উদ্বৃত্ত উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও সংরক্ষণাগারের অভাবে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়
-কৃষিমন্ত্রী
ময়মনসিংহ, ১৯ বৈশাখ (২ মে):
উদ্বৃত্ত উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও অপর্যাপ্ত মজুত সুবিধা ও সংরক্ষণাগারের অভাবে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুস শহীদ। তিনি বলেন, প্রায় প্রতিবছরই পেঁয়াজ নিয়ে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। সেজন্য পেঁয়াজের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিগত দুই বছরে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টন। দেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ৩৫ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, যা চাহিদার চেয়েও বেশি। কিন্তু পেঁয়াজ খুবই পঁচনশীল হওয়ায় ও সংরক্ষণাগারের অভাবে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়।
আজ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভরাডোবায় নেদারল্যান্ডস সরকারের উদ্যোগে নির্মিত পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষককে বিনামূল্যে ও ভরতুকিমূল্যে বীজ, সার প্রদানসহ সব রকমের সহযোগিতা দিচ্ছি। একইসঙ্গে, অপচয় বা পোস্ট হার্ভেস্ট লস কমাতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। ফসল হার্ভেস্টের পর ২০-৩০ শতাংশ নষ্ট বা অপচয় হয়। এই বিশাল অপচয় আমাদেরকে কমিয়ে আনতে হবে।
এ উদ্যোগ গ্রহণ করায় নেদারল্যান্ডস সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার আমাদের দেশের কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের জন্য খুবই উপকারে আসবে। কৃষকেরা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবে। এসময় নেদারল্যান্ডসের ও বাংলাদেশের বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরকে আরো পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার নির্মাণে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মলয় চৌধুরী, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দেশের জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিং নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতায় সংরক্ষণাগারটি নির্মাণ করেছে। প্রযুক্তি নেদারল্যান্ডসের। এটির ধারণক্ষমতা ৪০০ মেট্রিক টন।
#
কামরুল/সায়েম/শফি/রফিকুল/শামীম/২০২৪/১৯১৫ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর: ৪৪৮৮
অপতথ্য রোধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজ একসঙ্গে কাজ করতে পারে
- তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ১৯ বৈশাখ (২ মে):
অপতথ্য রোধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজ অংশীদার হয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
আজ রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ মাইডাস সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ইউনেস্কো, টিআইবি এবং আর্টিকেল নাইন্টিন আয়োজিত ‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সরকারের সমালোচনা করা সমস্যা নয়। সত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো সমালোচনা করলে সেটা সরকার স্বাগত জানায়। যখন পরিকল্পিতভবে অপতথ্যের প্রচার করা হয়, দেশের উন্নয়ন থামানোর জন্য সাংবাদিকতার অপব্যবহার করা হয়, অপতথ্য প্রচারের জন্য পরিবেশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেটিই সমস্যা তৈরি করে। এক্ষেত্রে অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতা বন্ধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজ একসাথে অংশীদার হয়ে কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহের সাথে সাথে সমাজের সর্বস্তরে অপতথ্যের অস্তিত্ব বিরাজ করে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খুবই কার্যকর, যখন এর ব্যবহার করা হয়। অপতথ্যের বিস্তৃতির মাধ্যমে যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অপব্যবহার করা হয়, তখন এটি অত্যন্ত নেতিবাচক হয়। এটি সমাজে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে নেতিবাচকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং জনগণের ক্ষতি করে। এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। অপতথ্য প্রতিরোধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সংগতিপূর্ণ। আমাদের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের মাধ্যমে এ বিষয়গুলোর সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। আমরা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সংগ্রাম করেছি, জীবন উৎসর্গ করেছি এবং একটি দেশ তৈরি করেছি।
এ সময় তিনি বলেন, যখন আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলবো তখন সেটা জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে হতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যাতে কোনো গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য অপব্যবহার না হয়। যখনই আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করবো, তা যেনো গণমাধ্যমের সঠিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে হয়, অপব্যবহারের ক্ষেত্রে নয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত পনেরো বছরে গণমাধ্যমের বিস্তৃতির জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন এবং গণমাধ্যমের দ্রুততার সাথে বিকাশ হয়েছে। সরকারের যদি গণমাধ্যম্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে থাকতো তাহলে সরকার গণমাধ্যমের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চাইতো না। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সরকারের অঙ্গীকারের একটি উদাহরণ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার জলবায়ু ও পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে একশো বছরের পরিকল্পনা ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করেছে। নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তার ২১০০ সালে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী না হলেও, বাংলাদেশ এর অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের অঙ্গীকার রয়েছে, তাই যারা এর বিরুদ্ধে কাজ করছে তাদেরকে সরকার মেনে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। তাই পরিবেশ সুরক্ষা পক্ষে প্রতিবেদন বা সাংবাদিকতা সরকার অবশ্যই স্বাগত জানাবে। কারণ ডেল্টা প্ল্যান অনুযায়ী আগামী একশো বছরে দীর্ঘমেয়াদে দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা, ভূমি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ নিয়ে সরকার কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত পরিষ্কার আমরা পরিবেশের সুরক্ষা দিতে চাই। যারা এর বাইরে অন্য কিছু করবে তাদের ব্যাপারে সাংবাদিকরা সঠিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে সেটাকে সরকার স্বাগত জানাবে। কারণ এটি পরিবেশের ব্যাপারে সরকারের কেন্দ্রীয় অঙ্গীকারের সাথে সংগতিপূর্ণ। সরকার শুধু উন্নয়নে বিশ্বাস করে না বরং টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে, যা পরিবেশগত সুরক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করে।
তিনি বলেন, প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে মৌলিক সততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার যে কোনো ধরনের সমালোচনা সব সময় স্বাগত জানাবে এবং দেশের যেকোনো প্রান্তের প্রতিবেদক বা সাংবাদিককে সুরক্ষা দেবে। সত্য ও বৈজ্ঞানিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে এমনকি সরকারের সমালোচনা করলেও সেটি সরকার প্রশংসা করবে ও স্বাগত জানাবে।
প্যানেল আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও অফিস প্রধান সুজান ভাইজ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক। প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন আর্টিকেল নাইন্টিন-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মঞ্জুর-ই-আলম।
প্যানেল আলোচনার পূর্বে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপন করেন দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শামসুদ্দিন ইলিয়াস এবং ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক উসরাত ফাহমিদা।
#
ইফতেখার/সায়েম/শফি/রফিকুল/শামীম/২০২৪/১৮০০ঘণ্টা
তথ্যববিরণী &