তথ্যবিবরণী নম্বর : ২১০৩
বর্তমান সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি পালন করছে
-- প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গাঁ
গংগাচড়া (রংপুর), ৩০ শ্রাবণ (১৪ আগস্ট) :
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেছেন, বর্তমান সরকার দুঃস্থ, দরিদ্র ও পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি পালন করছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বয়স্কভাতা, মাতৃকালীন ভাতা, দুঃস্থ মহিলা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা।
তিনি আজ রংপুর জেলার গংগাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ বায়তুস শরফ জামে মসজিদের ৬০ ফুট মিনার উদ্বোধন ও বায়তুস শরফ আফজালুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। এ সময় স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতা মোঃ সামসুল আলম ও মোঃ মতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতাভুক্ত সুবিধাভোগীদের ভাতা ইলেক্ট্রনিক্স পদ্ধতিতে সরাসরি প্রদান করা হচ্ছে। এতে করে দ্রুত ও সঠিক সময়ে ভাতাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এছাড়া আর্থিক খাতেও অন্তর্ভুক্তি বাড়ছে। তিনি বলেন মাতৃকালীন ভাতা ভোগীর সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ লাখে উন্নীত করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের প্রতিবন্ধীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ। প্রতিবন্ধীদের যানবাহনে সুবিধার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতিবন্ধী ও এতিমদের সমাজের বোঝা না ভেবে তাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সমাজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সহায়ক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী গংগাচড়া ডাকবাংলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগদান এবং অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ করেন।
বিকেলে প্রতিমন্ত্রী শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় উপস্থিত হন।
#
আহসান/মাহমুদ/আলী/মোশারফ/রেজাউল/২০১৭/২২০০ ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর : ২১০২
বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক
জ্বালানি সহযোগিতা অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করবে
-- বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
নাই পাই তাউ (মিয়ানমার), আগস্ট ১৪:
মিয়ানমারের নাই পাই তাউ (ঘধু চুর ঞধি )-এ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আজ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। অন্যদিকে সাত সদস্যের মিয়ানমার দলের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী ইউ উইং খাইং (ট ডরহ কযধরহম)। এ সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় আলোচনা করা হয় ।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আলোচনাকালে বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতা বাড়ানো গেলে উভয় দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি আরো মজবুত হবে। সামুদ্রিক সীমানার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য মিয়ানমারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেতুবন্ধ হতে পারে। পাওয়ার শেয়ারিং প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় করবে ।
তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাস রপ্তানি করতে পারে । বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের আন্তঃগ্রিড সংযোগ করা গেলে উভয় দেশ উপকৃত হবে। বাংলাদেশ চীন থেকে বিদ্যুৎ নিতে পারবে আর অন্যদিকে মিয়ানমারের সাথে চীন ও অন্যান্য আসিয়ান দেশের সাথে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে। যা প্রকারান্তরে বিমসটেক (ইওগঝঞঊঈ ) ও বিসিআইএম (ইঈওগ ) কে গতিশীল করবে। প্রতিমন্ত্রী এ সময় মিয়ানমারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো সুনির্দিষ্ট করতে প্রতিনিধি দল পাঠানো যেতে পারে।
মিয়ানমারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী ইউ উইং খাইং একসাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করতে হবে। তিনি পাওয়ার শেয়ারিং ও গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে কারিগরি সহযোগিতা প্রদানে আশ্বাস দিয়ে বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের পাওয়ার শেয়ারিং-এর অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগতে পারে।
মিায়ানমারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপমন্ত্রী ড. তুন লাইং ( উৎ. ঞঁহ ঘধরহম) এবং বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মাঝে মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ শফিউর রহমান, পিডিবি’র সদস্য (কোম্পানি এফিরার্স) মোস্তাফিজুর রহমান, পিজিসিবি’র নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী আলমগীর হোসেন ও বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব মোঃ আলাউদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
#
আসলাম/মাহমুদ/মোশারফ/রেজাউল/২০১৭/২০৩৫ ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর : ২১০১
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মায়া চৌধুরী
বন্যাপ্রবণ জেলাসমূহে ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ
ঢাকা, ৩০ শ্রাবণ (১৪ আগস্ট) :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীরবিক্রম বলেছেন, চলতি অর্থবছরে বন্যাপ্রবণ জেলাসমূহে ১০৬৩০ মেট্রিক টন চাল, ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা ও ৬০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বন্যাপ্লাবিত জেলাসমূহে গত কয়েকদিনে ১২০০ মেট্রিক টন চাল ও ৬০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।
তিনি আজ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনকালে এ তথ্য জানান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব গোলাম মোস্তফা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব রিয়াজ আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয় প্রত্যেকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে, প্রতি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, সমন্বয় ও ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সহযোগিতা করতে মন্ত্রণালয় থেকে কর্মকর্তা সংযুক্ত করা হয়েছে। উজানের দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটানে এবছর স্মরণকালের মারাত্মক বন্যা হয়েছে। মন্ত্রণালয় উজানের দেশের বন্যা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখছে। আর উজানের দেশসমূহে বন্যা হলে ভাটির দেশ হিসেবে উজানের প্রভাব আমাদের উপর পড়বে-এটাই স্বাভাবিক। তার আলোকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি ও মানুষের জন্য সহনশীল অবস্থায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সরকার ঘরে বসে নেই। জেলা প্রশাসকদের চাহিদা মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য ও আর্থিক বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। একটি লোকও যাতে খাবারের কারণে কষ্ট না পায় তার জন্য জেলা প্রশাসনকে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালাতে বলা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য উপস্থাপন করে মন্ত্রী বলেন এ পর্যন্ত ২০টি জেলার ৫৬টি উপজেলা বন্যাপ্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলায় ইতোমধ্যে ৫৬২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪৯৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজার ৭৬৯টি। এ সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস-বৃদ্ধি হতে পারে। এখন পর্যন্ত ২৭টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে রয়েছে।
বন্যা মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, সিপিপি ও মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বন্যাপ্লাবিত জেলাসমূহের প্রত্যেকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় পর্যাপ্ত মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি মেডিক্যাল টিমদের অনুরোধ করেন তারা যেন প্রতিদিন বন্যা কবলিত এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করে সেবাকার্য চালিয়ে যান। তিনি জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান তারা যেন বন্যা প্লাবিত এলাকার টিউবওয়েলগুলো উঁচু করে দিয়ে, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং পানি বাহিত রোগ থেকে দুর্গত মানুষদের রক্ষা করেন। যেসব বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে সেগুলো দ্রুত মেরামত করতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেন মন্ত্রী। আর কোন বেড়িবাঁধ যাতে নতুন করে ভেঙে না যায় তার জন্য আন্তরিক চেষ্টা করতে ও পশুখাদ্যের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন তিনি।
#
ফারুক/মাহমুদ/মোশারফ/রেজাউল/২০১৭/২০৩৩ ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর : ২১০০
পরমাণু শক্তি কমিশনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা
ঢাকা, ৩০ শ্রাবণ (১৪ আগস্ট) :
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে আজ ঢাকার আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান প্রধান অতিথি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ আনোয়ার হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর ওপর আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্র্রষ্টা। তাঁর কারণেই আজ আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি, পেয়েছি স্বাধীনতা। আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করা হলে এদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময়ই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের কথা চিন্তা করতেন। এরই ফলশ্রুতিতে আজ আমরা রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দ্বারপ্রান্তে। বর্তমান সরকার আজ তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. প্রকৌশলী মোঃ মঞ্জুরুল হক, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নঈম চৌধুরী এবং অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ আনোয়ার হোসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন। এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৬টি সংস্থার প্রধানগণসহ কমিশনের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী, পরমাণু চিকিৎসক ও কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা পর্ব শুরুর পূর্বে দোয়া অনুষ্ঠানে কমিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন।
#
কামরুল/মাহমুদ/মোশারফ/রেজাউল/২০১৭/২০৩০ ঘণ্টা
Handout Number : 2099
Prime Minister’s message on the National Mourning Day
Dhaka, 14 August :
Prime Minister Sheikh Hasina has given the following message on the occasion of the National Mourning Day on 15th August 2017.
“The 15 August is the National Mourning Day. On this day in 1975, the greatest Bangalee of all time, Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, along with his family members, was assassinated in one of the most barbaric carnages in the human history.
Eighteen members of the family along with Bangabandhu's wife Sheikh Fazilatun Nesa Mujib, three sons- Captain Sheikh Kamal, Lieutenant Sheikh Jamal and Sheikh Russel- two Daughters-in-law Sultana Kamal and Rosy Jamal, brother Sheikh Naser, peasant leader Abdur Rab Serniabat, youth leader Sheikh Fazlul Haq Moni and his wife Arzu Moni, Baby Serniabat, Sukanta Babu, Arif and Abdul Nayeem Khan Rintu were killed on that fateful night. Bangabandhu's Military Secretary Colonel Jamil was also killed. Some members of a family at Mohammadpur in the capital were also killed by artillery shells fired by the killers on the same day.
On this day, I pray to the Almighty Allah for the salvation of the souls of all martyrs of the 15 August, including the Father of the Nation.
Under the dynamic, courageous and charismatic leadership of the Father of the Nation, the people of this territory brought the reddish sun of the independence breaking the shackles of subjugation of thousands of years. The Bangalee have gotten their own nation-state, flag and national anthem.
But Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman was killed at a time when he had undertaken an arduous task of building a Golden Bangladesh reconstructing the war-ravaged country and unifying the whole nation. The defeated forces of the Liberation War made abortive attempts to ruin the tradition, culture and advancement of the Bangalee nation. Their aim was to destroy the secular democratic fabric of Bangladesh.
The anti-liberation forces linked to the carnage initiated the politics of assassination, coup and conspiracy. The trial of Bangabandhu's brutal assassination was blocked through promulgation of indemnity ordinance.
Ziaur Rahman usurped the state power and promulgated Martial Law suspending the constitution and overthrowing the people's elected government. The killers of the Father of the Nation were rewarded and given jobs at the Bangladesh missions abroad. The anti-liberation elements were given nationality. They were made partners of the state power and rehabilitated politically and socially. The subsequent government of BNP-Jamaat alliance had followed the same path.
Contd/2
-2-
Winning the general elections on 12 June 1996, Bangladesh Awami League assumed state power after long 21 years. A new horizon of development was initiated during the 5-year tenure overcoming the obstacles of the past. The country once deficient in food production became self-sufficient. This period was a 'golden era' for the countrymen. We had initiated the trial of the Bangabandhu Sheikh Mujib killing case. But after taking over state power, BNP-Jamaat government stopped the trial.
The people of the county made Awami League victorious again in the 29 December general elections in 2008. Overcoming the stagnancy left by the previous BNP-Jamaat government and global economic recession, we have put the country on firm economic footing. Rejecting BNP-Jamaat's conspiracy to foil the general elections on 5th January 2014, people upheld the constitutional process by casting their votes. Bangladesh Awami League formed the government again and continued the work of development.
During the last eight and a half years, we have achieved desired advancement in every sector. Bangladesh is now a 'role model' of socio-economic development. We shall turn Bangladesh into a middle-income country before 2021 and a developed one by 2041, InshaAllah.
We have executed the verdict of the Bangabandhu killing case. The trial of the killers of four national leaders has been completed. The verdicts of the cases against war criminals are being executed. Our government is following 'zero tolerance' policy to uproot militancy-terrorism. The path of grabbing state power unconstitutionally has been stopped by passing 15th amendment to the Constitution by the Parliament. We have to remain ready to resist any ill-attempt by the anti-liberation communal group and anti-development-democracy forces.
The killers were able to assassinate Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman but they could not erase his dreams and ideals. Let us come and turn the grief of the loss of Bangabandhu into strength. Let us engage ourselves holding Bangabandhu's philosophy in building a non-communal, hunger-illiteracy-free and happy-prosperous Bangladesh and establish the Golden Bangladesh as dreamt by the Father of the Nation. That is our solemn pledge on the National Mourning Day.
Joi Bangla, Joi Bangabandhu
May Bangladesh Live Forever.”
#
Imrul/Mahmud/Mosharaf/Rezaul/2017/1850 hours
Handout Number : 2098
President's message on the National Mourning Day
Dhaka, 14 August :
President Md. Abdul Hamid has given the following message on the occasion of the National Mourning Day on 15th August 2017.
“Today is tragic 15 August, National Mourning Day and the 42nd martyrdom anniversary of Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman. On this day in 1975, the greatest Bangali of all time and Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman along with his wife, sons, daughters-in-law and near and dear ones embraced martyrdom. With heavy heart, I pay my deep homage to them. I pray to the Almighty Allah for the salvation of the departed souls on this Mourning Day.
The 15 August, 1975 is regarded as a disgraceful chapter in the history of the Bangali. On this fateful night, the undisputed leader and Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman was brutally assassinated at his residence by a group of killers with the connivance of anti-liberation forces. His wife Sheikh Fazilatun Nesa Mujib, sons namely Sheikh Kamal, Sheikh Jamal and Sheikh Russel and some near and dear ones were also assassinated along with Bangabandhu. This barbarous occurrence was rare not only in the history of Bangladesh but also in the history of the world. The anti-liberation forces wanted to reinstate the defeated forces by annihilating the ideals of the war of liberation through the massacre.
Bangabandhu, a visionary leader and the prime mover of independence, led the nation at every struggle and democratic movement including the historic Language Movement in 1952, Juktafront Election in 1954, movement against Martial Law in 1958, Six-Point Movement in 1966, Mass Upsurge in 1969 and the General Elections in 1970 which all were directed towards attaining the right to self-determination. Bangabandhu never compromised on the question of the rights of our people. He upheld the interest of Bangali and Bangladesh even at the gallows. Crossing manifold acclivities and declivities, the great leader finally declared country’s independence on March 26, 1971 and the Bangali achieved ultimate victory through a nine month long armed struggle under his leadership. The world renowned Newsweek Magazine of its 5 April, 1971 issue termed Bangabandhu as a “Poet of Politics” which marked the firm conviction and deep reverence by the world community to the leadership of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman.
In his belief, Father of the Nation always nourished the well-being of Bangla, Bangali and Bangladesh. He was the harbinger of freedom of the Bangali. For his outstanding contributions, Bangabandhu and Bangladesh thus emerged as a unique symbol to the people of Bangladesh. Though the assassins killed Father of the Nation, they could not wipe out the principle and ideals of this great man. I am confident that the name and fame of Father of the Nation will remain ever shining in the mind of millions of Bangalis so long as the country and its people will stay alive.
Bangabandhu, throughout his life, struggled for independence along with people's economic emancipation. He dreamt of building "Sonar Bangla" (Golden Bangla) free from hunger and poverty. Enriching with knowledge and prudence, therefore, it is our utmost responsibility to build our country a happy and prosperous one by completing the unfinished task of Bangabandhu and in this way we can pay our deep tribute to the immortal soul of the soil.
Bangladesh has embarked upon a remarkable journey towards development and prosperity. In every aspect of socio-economic indicator, Bangladesh has attained impressive achievements and is now marching ahead with attaining continuous growth, raising per capita income, implementing mega project like the Padma Bridge by own resources. The Hon'ble Prime Minister Sheikh Hasina, daughter of Bangabandhu, has set `Vision 2021' and `Vision 2041' in order to transform Bangladesh into a prosperous and developed country. With the concerted efforts from all, I am confident that Bangladesh would be a developed one by 2041, InshaAllah.
On the National Mourning Day, let us translate our grief into strength and devote ourselves to build "Sonar Bangla" (Golden Bangla) as dreamt by Father of the Nation.
Khoda Hafez, May Bangladesh Live Forever.”
#
Azad/Mahmud/Mosharaf/Rezaul/2017/1830 hours
তথ্যবিবরণী নম্বর : ২০৯৭
জাতীয় শোক দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী
ঢাকা, ৩০ শ্রাবণ (১৪ আগস্ট) :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের এই দিনে সপরিবারে মানব ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকা-ের শিকার হন।
জাতির পিতার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, দশ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, কৃষকনেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, বেবী সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ, আব্দুল নঈম খান রিন্টুসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকেও ঘৃণ্য ঘাতকরা এ দিনে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সামরিক সচিব কর্নেল জামিলও নিহত হন। ঘাতকদের কামানের গোলার আঘাতে মোহাম্মদপুরে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন হতাহত হন।
জাতীয় শোক দিবসে আমি মহান আল্লাহ্তায়ালার দরবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সকল শহিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
জাতির পিতার দূরদর্শী, সাহসী এবং ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। বাঙালি পেয়েছে স্বাধীন রাষ্ট্র, নিজস্ব পতাকা ও জাতীয় সংগীত।
সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র তাঁকে হত্যা করে। এর মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা।
এই জঘন্য হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যার বিচারের পথও বন্ধ করে দেয়।
জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। মার্শাল ল’ জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে। সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে। বিদেশে দূতাবাসে চাকুরি দেয়। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দেয়। রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করে। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করে। পরবর্তী বিএনপি-জামাত সরকারও একই পথ অনুসরণ করে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে। অতীতের জঞ্জাল সরিয়ে এই ৫ বছরে দেশে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের এক নবদিগন্তের সূচনা হয়। খাদ্য-ঘাটতির দেশ খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এ সময়টা ছিল একটি স্বর্ণ যুগ। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার শুরু করি। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে জাতির পিতা হত্যার বিচার কাজ বন্ধ করে দেয়।
দেশের জনগণ ২০০৮ সালে ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পুনরায় বিপুল ভোটে বিজয়ী করে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে পূর্ববর্তী সরকারগুলোর রেখে যাওয়া অচলাবস্থা এবং বিশ্বমন্দা কাটিয়ে আমরা দেশকে দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার কাজ শুরু করি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি-জামাত জোটের নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারাকে জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে ভোট দিয়ে দেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। আবারও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখে।
গত সাড়ে ৮ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন করেছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’। ২০২১ সালের আগেই আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ।
আমরা সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আমাদের সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করেছি। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র-বিরোধীদের যে-কোনো অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। আসুন, আমরা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করি। তাঁর ত্যাগ এবং তিতীক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশে চিরজীবী হোক।”
#
ইমরুল/মাহমুদ/মোশারফ/রেজাউল/২০১৭/১৮১০ ঘণ্টা
তথ্যবিবরণী নম্বর : ২০৯৬
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এ দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়গণ শাহাদত বরণ করেন। আমি শোকাহত চিত্তে তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। জাতীয় শোক দিবসে পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এক কলঙ্কিত অধ্যায়। দেশের স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘাতকচক্রের হাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান শহিদ হন। একই সাথে শহিদ হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ অনেক নিকট আত্মীয়। এ নৃশংস ঘটনা কেবল বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল। এ হত্যাকা-ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে মুছে ফেলে পরাজিত শক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্বাধীনতার রূপকার। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। দীর্ঘ চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এই মহান নেতা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তাঁরই নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিজয় অর্জন করি। বিশ্বখ্যাত নিউজউইক ম্যাগাজিন ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল সংখ্যায় বঙ্গবন্ধুকে ‘চড়বঃ ড়ভ চড়ষরঃরপং’ হিসেবে ভূষিত করে, যা ছিল তাঁর নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বসম্প্রদায়ের অবিচল আস্থা ও গভীর শ্রদ্ধা।
জাতির পিতার চিন্তা-চেতনায় সবসময় কাজ করত বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশ। তিনি ছিলেন বাঙালির মুক্তির দূত। তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য আজ এ দেশের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তাঁর নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।
বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁর স্বপ্ন। তাই আমাদের দায়িত্ব হবে জ্ঞানগরিমায় সমৃদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। তাহলেই আমরা চিরঞ্জীব এই মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারব।
বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে ধাবমান। ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নসহ আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে ‘ভিশন ২০২১’ এবং ‘ভিশন ২০৪১’ ঘোষণা করেছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে, ইনশাআল্লাহ। এ জন্য প্রয়োজন সকলের সমন্বিত প্রয়াস।
আসুন, জাতীয় শোক দিবসে আমরা জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করি এবং তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আত্মনিয়োগ করি।